Flower Wiki

বাংলাদেশের অজানা পাঁচটি ফুল

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। নানা রঙের বাহারি ফুল বাংলাদেশের প্রকৃতিতে সারা-বছর জুড়েই দেখা যায়। বাংলাদেশে অন্তত কয়েক হাজার প্রজাতির ফুল ফোটে। বাংলাদেশের ফুলের মধ্যে গোলাপ, বেলি, রজনীগন্ধা, শাপলা, কৃষ্ণচূড়া এগুলোই বেশি বিখ্যাত। কিন্তু এমন কিছু ফুল আছে, যেগুলোর সাথে মানুষ তেমন একটা পরিচিত নয়। এমন কিছু অজানা ফুলের সাথেই আজকের পোস্টে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।


১। শ্বেতকাঞ্চন


শ্বেতকাঞ্চন
শ্বেতকাঞ্চন

শ্বেতকাঞ্চন নামটাই কিন্তু অনেক দারুণ। এই ফুলটি হচ্ছে অর্কিডের এক বিশেষ প্রজাতি। দেখতেও অসাধারণ হওয়ায় বাগানের শোভাবর্ধনে এই ফুল একদম আদর্শ। শ্বেতকাঞ্চন ফুলের গাছ ২-৩ মিটার উঁচু হয়, পাতার দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ১২ সেন্টিমিটার হয়। গাছের আকার ঝোপবিশিষ্ট হয়, এবং মার্চ-অক্টোবরের দিকে সাদা রঙের ফুল ফোটে।





২। নাগকেশর


নাগকেশর ফুলের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আমেরিকা, তবে পৃথিবীর সর্বত্রই এই ফুল বিসস্তৃত। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রায় দুই-তিন হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষে এই ফুল জন্মে আসছে, তাই ভারতকেও এর উৎপত্তিস্থল হিসেবে ধরে নেয়া যায়।


নাগকেশর ফুল
নাগকেশর ফুল

নাগকেশর গাছ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ, যা প্রায় ২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। গাছগুলো মূলত দ্রুত বৃদ্ধি আর মন মাতানো ফুলের জন্যই রোপন করা হয়। ফুলগুলোয় কমলা, উজ্জ্বল লাল, গোলাপী ইত্যাদি রঙের সমাবেশ দেখা যায়। নাগকেশরের সুগন্ধও মনকাড়া।

৩। স্বর্ণচাপা


স্বর্ণচাঁপা
স্বর্ণচাঁপা

স্বর্ণচাপা ফুল উঁচু ভূমিতে বেশি দেখা যায়, তবে সমতল ভূমিতেও এই ফুল ফোটে কখনো কখনো। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে স্বর্ণচাপা প্রায়শই নজরে পড়ে। স্বর্ণচাপা ফুলের গাছের কান্ড ধূসর রঙের, উন্নত এবং সরল হয়। পাতা দেখতে চ্যাপ্টা, ঘনবদ্ধ এবং উজ্জ্বল সবুজ রঙের হয়ে থাকে। স্বর্ণচাপা ফুলের রঙ বিভিন্ন রকমের হয়, কিন্তু বাংলাদেশে হলুদ রঙের ফুলই বেশি দেখা যায়। আবহাওয়া, মাটি এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন রঙের স্বর্ণচাপা ফোটে। ফুল ফোটার সময় গ্রীষ্মের প্রথম ভাগ থেকে বর্ষা-শরৎ পর্যন্ত।


৪। বড়নখা


বড়নখা

এই ফুলকে অনেকেই কচুরিপানার সাথে গুলিয়ে ফেলেন। কচুরিপানা আর বড়নখা একই গোত্রের, কিন্তু ফুল ভিন্ন। বড়নখা একদমই আমাদের স্থানীয় ফুল। অন্যান্য জলজ উদ্ভিদের সাথে এই ফুলের পার্থক্য হচ্ছে, বড়নখার কাণ্ড পানির নিচে মাটিতে গেঁথে থাকে, ভাসমান থাকে না। বাংলাদেশের হাওর, বিল, জলাভূমি, বর্ষাকালের ধানি জমি ইত্যাদি স্থানে প্রচুর বড়নখা ফুল দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে সবজি হিসেবেও এই ফুল খাওয়া হয়। দাঁতের ব্যথা, হাপানি ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় বড়নখার শিকড় এবং ছাল বেশ উপকারী।


৫। সর্পগন্ধা


সর্পগন্ধা
সর্পগন্ধা

সর্পগন্ধা মূলত ঔষধী গুনের জন্য বেশি পরিচিত। এই ফুল চন্দ্রা নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের পাহারি অঞ্চলে এই ফুল বেশি দেখা যায়। সর্পগন্ধা গুল্মজাতীয় উদ্ভিত, ফুল গুচ্ছাকার। সর্পগন্ধার রস মস্তিষ্কের রোগে বেশ উপকারী। তাই পাগলের ওষুধ বলেও অনেকে এই ফুল চেনে। সাপের বিষ, এবং পোকা মাকড়ের দংশনে বিশেষ ফলদায়ক এই উদ্ভিতে রয়েছে এলকালয়েড, যা রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে।