Blog Mothers Day Occassions & Festival

মা-দিবসের ইতিহাস

প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের রবিবারে বিশ্ব মা-দিবস উদযাপিত হয়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অতীতে বাংলাদেশে মা-দিবস উদযাপনের তেমন একটা চল না থাকলেও এখন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মা-দিবসের আবেদন অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশের সন্তানরাও এখন তাদের মা-দের বিভিন্ন উপহার দিয়ে এই দিবস উদযাপন করে। কিন্তু মা-দিবসের এই উদযাপনের শুরুটা আসলে কবে থেকে? কেনই বা এই দিবসের উদযাপন শুরু হয়েছিল? সেই ইতিহাসই আজকের পোস্টে আলোচনা করছি।

মা দিবস আসলে কবে থেকে শুরু হয়েছে তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে কিছুটা মতবিরোধ রয়েছে। ১৮৫৮ সালে এন জার্ভিস নামধারী যুক্তরাষ্ট্রের এপালাকিয়াতে বসবাসকারী একজন নারী প্রথম মা-দিবস ধারনার অবতারনা করেন। এর পেছনের উদ্দেশ্য ছিলো দূষিত পানি এবং অনিরাপদ স্যানিটেশনের কারণে প্রসূতি মা-দের মৃত্যু রোধ করার জন্য সচেতনতা গড়ে তোলা। পরবর্তীতে ১৮৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নারীবাদী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ জুলিয়া ওয়ার্ড ফ্রাঙ্কো-প্রুসিয়ান যুদ্ধের পরপরই মা’দের জন্য বিশেষ একটি দিনের উদযাপন শুরু করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শান্তির বাণী বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দেয়া।




‘মা’, পৃথিবীর সবথেকে ছোট, কিন্তু সবথেকে ভালবাসায় পরিপূর্ণ শব্দ। বিশ্ব মা দিবসে চলুন ভালবাসার আঁচলে সবসময় আগলে রাখা আমাদের মা-দের মুখে হাসি ফোটাই। মা দিবসের স্পেশাল ফুলের তোড়ার সম্ভার থেকে বেছে নিন আপনার পছন্দেরটি।


 



১৯০৫ সালে এন জার্ভিসের মৃত্যু হয়। তার কণ্যা এনা মৃত মায়ের সারাজীবনের সমাজ-সংস্কারক কার্যক্রমকে যথাযথ সম্মান দেয়ার জন্য ক্যাম্পেইন শুরু করেন, যার ফলে ১৯১৪ সালে কংগ্রেসে মা-দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এন জারভিস, এনা জারভিস কিংবা জুলিয়া ওয়ার্ড, মা-দিবসকে মর্যাদা দেয়ার পেছনে কারোর অবদানই কম নয়। তাদের সবার অবদানের বর্তমানে বিশ্বের ৪০ টি দেশে মা-দিবস উদযাপিত হয়, এবং সন্তানের জীবন গড়ায় পৃথিবীর সকল মায়েদের অবদানকে অকপটে স্বীকার করা হয়।অর্থাৎ, মা-দিবসের ইতিহাস রীতিমত ১৫০ বছরের পুরনো। এত বছর পাড় হয়ে যাওয়ায় উদযাপনের ধরনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন এসেছে স্বাভাবিকভাবেই। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং চিকিৎসা-বিজ্ঞান অনেক এগিয়ে যাওয়ায় এখন হয়ত পৃথিবীর অধিকাংশ মায়েরাই প্রসূতি অবস্থায় বিশুদ্ধ পানি কিংবা উন্নত স্যানিটেশনের অভাবে মৃত্যুর ভয়ে থাকেন না, কিন্ত এখনও মায়েদের অনেক সংগ্রামের জীবনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাই বিশ্ব মা-দিবস শুধুমাত্র মায়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনেরই একটা মাধ্যম নয়, বরঞ্চ মাতৃত্বের মর্ম সবার অনুভব করতে পারারও একটা দিন।

তাই মা-দিবসের মূল আবেদন কখনোই মা’কে কিছু একটা উপহার দিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরঞ্চ এর গুরুত্ব আরো অনেক বেশি সুদূরপ্রসারী। যেহেতু এই দিবসের ইতিহাসই মা’দের সংগ্রামকে মহিমান্বিত করে, তাই উপহার দেয়ার পাশাপাশি প্রতিজ্ঞা করুন সকল মা’দের জীবন আরো সহজ আর সুন্দর করার জন্য কিছুটা হলেও চেষ্টা করবেন। উপহার তো দেবেন অবশ্যই, এর সাথে মা’কে জানাতে ভুলবেন না যে তার প্রতি আপনি কতটা কৃতজ্ঞ।

বিগত দেড়শ বছরের মত পরবর্তী বছরগুলোতেও যে মা-দিবস সহ অন্যান্য সকল দিবসই উদযাপনের ধরনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই উদযাপনের পেছনের কারণগুলো অনুধাবন করতে পারা। তাহলে উদযাপন যে উপায়েই করা হোক না কেন, তা থেকে সবসময় ইতিবাচক কিছুই নেয়ার থাকবে।




‘মা’, পৃথিবীর সবথেকে ছোট, কিন্তু সবথেকে ভালবাসায় পরিপূর্ণ শব্দ। বিশ্ব মা দিবসে চলুন ভালবাসার আঁচলে সবসময় আগলে রাখা আমাদের মা-দের মুখে হাসি ফোটাই। মা দিবসের স্পেশাল ফুলের তোড়ার সম্ভার থেকে বেছে নিন আপনার পছন্দেরটি।