ইতিহাস পরিবর্তনকারী পাঁচ জন মা
ঐতিহাসিকভাবেই নারীজাতিকে অনেক বঞ্চনা এবং সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। এখনও অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়, কিন্তু এমন একটা সময় ছিল যখন নারীদের কোন ভোটাধিকার, সম্পত্তির অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার ইত্যাদি ছিল না। ওই রকম সময়েও এমন কিছু ‘মা’ ছিলেন, যারা সংগ্রাম করে নিজেদের এবং নিজের সন্তানদের জীবনে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন। এমন পাঁচজন মা-কে নিয়েই আজকের পোস্ট।
১। মেরি কুরি

মেরি কুরি যখন নোবেল পুরস্কার জেতেন, তখন মেয়েরা বিজ্ঞান চর্চা করবে এটা ভাবাই দুষ্কর ছিল। তিনি শুধু যে বিজ্ঞান চর্চা করেছেন তা’ই নয়, বরঞ্চ বিজ্ঞান চর্চার সর্বোচ্চ সম্মাননাও নিজের করে নিয়েছেন। ১৯০৬ সালে মেরি কুরির স্বামী মারা যান। এর পর বেশ কষ্ট করেই নিজের দুই মেয়েকে বড় করতে হয়। পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালে মেরি কুরির মেয়ে আইরিন কুরিও রয়ায়নে নোবেল পুরস্কার জেতেন। নোবেল জেতার পর আইরিন স্বীকার করেন তার এতদূর আসার পেছনে মেরি কুরিই ছিলেন সবথেকে বড় অনুপ্রেরণা।
২। আইরিনা স্যান্ডলার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জার্মান নাৎসি বাহিনী পোল্যান্ডে ইহুদিদের ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তখন পোল্যান্ডের ওয়ার’স সোশাল ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন আইরিনা স্যান্ডলার। তিনি ২৫০০ এরও বেশি ইহুদি শিশুকে নাৎসি বাহিনীর তাণ্ডব থেকে বাঁচতে পোল্যান্ড ছেড়ে পালাতে সাহায্য করেন। জাল কাগজপত্ তৈরী করে দিয়ে এই শিশুদের তিনি পোল্যান্ডের বাইরের এতিমখানা অথবা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি নিজে ছিলেন তিন সন্তানের জননী। পরবর্তীতে নাৎসি বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রবল অত্যাচারের মুখেও তিনি পালিয়ে যাওয়া শিশুদের ব্যাপারে কোন তথ্য দেন নি।
৩। জে কে রাওলিং

বিশ্বখ্যাত হ্যারি পটার সিরিজের লেখিকা জে কে রাওলিংকে আমরা সবাই চিনি। কিন্তু খ্যাতি পাওয়ার আগে তার আর্থিক এবং মানসিক অবস্থার কোনটাই খুব একটা ভালো ছিল না। রাওলিং আর তার সন্তানকে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিলেন তার স্বামী। বেশ কিছুদিন সরকারের দয়া দাক্ষিণ্যে জীবন কাটাতে হয়েছে রাওলিংকে। লেখিকা হিসেবে সফল হওয়ার পর নিজের দুর্দিনের কথা ভুলে যান নি তিনি, তৈরী করেছেন জিঞ্জারব্রেড নামক এক প্রতিষ্ঠান, যা কিনা বিশ্ব জুড়ে সিঙ্গেল মাদার এবং তাদের সন্তানদের জীবন উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে।
৪। ন্যান্সী এডিসন

ন্যান্সী এডিসনের সন্তানের মোট সংখ্যা সাত, এবং তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠজন সবারই পরিচিত, টমাস আলভা এডিসন। ছোটবেলায় স্কুলের গতানুগতিক গন্ডির মধ্যে টমাস আলভা এডিসন একদমই মানিয়ে নিতে পারেননি। তাছাড়া, ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় স্কুলের পড়া শিখতে এবং বুঝতে খুবই সমস্যা হতো তার। ন্যান্সী তাই টমাসকে স্কুলের বদলে বাড়িতেই পরানো শুরু করেন, এবং আস্তে আস্তে সমস্যা কাটিয়ে উঠে টমাস বিশ্ববিখ্যাত উদ্ভাবকে পরিণত হয়। কে বলতে পারে, ন্যান্সী না থাকলে হয়ত এখনও আমাদের ‘অন্ধকারে’ থাকা লাগত।
৫। লু জিয়াওইং

লু জিয়াওইং একদমই গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা, অশিক্ষিত একজন মহিলা। চীনের জিনহুয়া প্রদেশে ময়লা ঘেঁটে তার জীবন চলত। কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে তিনি আজ পর্যন্ত ময়লার ভাগাড়ে খুঁজে পাওয়া ৩২ টি শিশুকে উদ্ধার করে দত্তক নেন চীন সরকারের নেয়া এক সন্তান নীতি, চরম দারিদ্র্য ইত্যাদি কারণে অনেকেই সন্তানকে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রেখে যাওয়া শুরু করেন ১৯৭০ এর দিকে। ওই শিশুদের অনেকেই পরে নতুন জীবন পেয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পায়।
Related posts
In the world of online gaming, few games have captured the attention and excitement of players as much as Slot Games....
Winning consistently at a casino may seem like an impossible dream, but with the right strategies and mindset, you can significantly...
ফুল পৃথিবীতে পবিত্রতার প্রতীক বহন করে। এটা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে তার প্রতীকী ভাষাকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে এবং পৃথিবীকে করে সুন্দর,...