Flower Wiki

বাংলাদেশের বসন্তের ফুল

বাংলাদেশের ছয় ঋতুর মধ্যে শীত থেকে বসন্তের পরিবর্তনটাই সবথেকে চোখের পড়ার মত। শীতকালে বেশিরভাগ গাছের পাতা ঝরে যায়, প্রকৃতিতে একটু রুক্ষ্ণ ভাব চলে আসে। বসন্ত আসতে না আসতেই নতুন করে সব গাছে আবার পাতা দেখা যায়। আর অনেক রকমের মৌসুমী ফুল ফোটার কারণে চারদিকে দেখা যায় রঙের ছড়াছড়ি। সারাবছরই বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ফুল দেখা গেলেও বসন্তকালেই এর সংখ্যা সবথেকে বেশি। বসন্তকালের কিছু প্রধাণ ফুলের বর্ণনা জেনে নিন।

কৃষ্ণচূড়া


কৃষ্ণচূড়া

নামটা যেমন সুন্দর, তেমনি কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতেও অসাধারণ। শীতের রুক্ষ্ণ প্রকৃতির দিনগুলো শেষ হওয়ার পর যেন হঠাত একদিন দেখা যায় গাছের আগায় যেন আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলটা এমনই হয়। একসাথে অনেক ফুল ফোটে দেখে পুরো গাছটাই যেন বসন্তের আগমনী বার্তা জানায়। লাল, কমলা এবং হালকা হলুদ রঙের মিশেলে কৃষ্ণচূড়া বসন্তের সব রঙের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। কৃষ্ণচূড়া ফুলে গন্ধ নেই, কিন্তু এই ফুলের রূপ সেই অভাব পুরোপুরিভাবে ভুলিয়ে দিতে সক্ষম। বর্ষার শেষভাগ পর্যন্ত থাকে এই ফুলের মৌসুম।

চাঁপা


চাঁপা

চাঁপা ফুলের নামের উৎস সংস্কৃত চম্পক শব্দ। চম্পক শব্দের অর্থ হচ্ছে চিরসবুজ। এই নামকরণের পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে। চাঁপা গাছে সারা বছরই পাতা থাকে। এমনকি শীতকালেও চাঁপা গাছের সব পাতা ঝরে যায় না। চাঁপা ফুলও হয় বিভিন্ন রঙের, সাদা, সোনালি কিংবা হলুদ। আর সবথেকে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, চাঁপা ফুলের গন্ধ। চাঁপার গন্ধে মাতাল হয়ে অনেক কবি-সাহিত্যিকই তাদের সাহিত্যকর্মে এই ফুলের কথা তুলে ধরেছেন। সারাবছরই কম-বেশি এই ফুল ফুটতে দেখা যায়। তবে বসন্তকালে চাঁপাফুল সবথেকে বেশি ফোটে। তা’ই একে বসন্তের ফুল বলেই চেনে সবাই।



কনকচাঁপা


কনকচাঁপা

নাম শুনে মনে হতে পারে কনকচাঁপা হয়তো চাঁপা ফুলেরই কোন জাত, কিন্তু আদতে তা নয়। এই ফুলের গাছ আকারে ছোট হয়, আর ছোট ছোট মঞ্জুরির ফুল একসাথে অনেকগুলো করে ফোটে। নতুন পাতার রঙ হয় তামাটে, কিন্তু পরিণত পাতার রঙ একদম সবুজ হয়। শীতকালে কনকচাঁপা ফুলের গাছ একদমই ন্যাড়া হয়ে যায়, আর বসন্ত আসতে না আসতেই কড়া হলুদ রঙয়ের পাপড়ি আর তামাটে রঙের নতুন পাতায় তা একদমই নতুন রূপে দেখা দেয়।

নয়নতারা


নয়নতারা

এই ফুলের নামও অদ্ভুত সুন্দর, আর ফুলগুলো দেখতেও কিছুটা অদ্ভুত রঙের হয়ে থাকে। ফুলের আকার পয়সার মত গোলাকার হওয়ার কারণে গ্রামের দিকে একে অনেকে পয়সাফুল বলেও চেনে। শুধু ফুলই নয়, নয়নতারা ফুলের পাতাও গোলাকৃতির হয়। নয়নতারা ফুল মানেই রঙের বাহার। সাদা, গোলাপি, হালকা নীল ইত্যাদিসহ আরো অনেক রকমের নয়নতারা ফুল দেখা যায় বাংলাদেশে।

পলাশ


পলাশ

অরণ্যের অগ্নিশিখা বলে পরিচিত এই ফুল একদম রক্তলাল রঙয়ের হয়ে থাকে। শীতকালে এর সব পাতা ঝরে যায়, আর বসন্ত আসতেই লাল ফুলে ভরে যায় পুরো বাগান। আর ফুল ফুটতে শুরু করে পাতা জন্মানোরও আগে। ফুলগুলো দেখতে অনেকটা কাঁকড়ার পায়ের মত। রূপের পাশাপাশি এই ফুলের ঔষধী গুণও কিন্তু অনেক।