Flower Wiki

পৃথিবীর সব থেকে বাজে দুর্গন্ধযুক্ত ৫টি ফুল

ফুল কার না ভালো লাগে? মন মাতানো রঙ আর সুগন্ধের জন্য ফুল কিন্তু উপহার দেয়ার জন্যও আমাদের প্রথম পছন্দ। তবে সব ফুলই কিন্তু সুগন্ধে ভরপুর নয়। বরঞ্চ এমন কিছু ফুল রয়েছে, যার থেকে আপনার ১০০ হাত দূরে থাকা উচিত। এই ফুলগুলোর কাছে গেলে দুর্গন্ধে রীতিমত অজ্ঞান হওয়ার যোগার হয়। দেখতে যেমনই হোক না কেন, বিশ্রী দুর্গন্ধের কারণে এই ফুলগুলোর কুখ্যাতি জগতজোড়া। চলুন জেনে নেয়া যাক এমনই ছয়টি ফুল সম্পর্কে।


১। টাইটান আরুম


টাইটান আরুম

এই ফুলের গন্ধই যে শুধু বিশ্রী তা নয়, বরঞ্চ এই ফুল দেখতেও খুবই বিদগুটে। পৃথিবীর সবথেকে বড় ফুলগুলোর মধ্যে অন্যতম টাইটান আরুম উচ্চতায় প্রায় দুই থেকে তিন মিটার পর্যন্ত হয়! এই ফুল কিন্তু ‘লাশ ফুল’ হিসেবেও পরিচিত। হবে না’ই বা কেন বলুন? এই ফুলের গন্ধ যে একদম মৃত লাশের মত! শুধু তা’ই নয়, একদম পচা, গলা লাশের যেমন গন্ধ হয়, এই ফুলের গন্ধ একদম তেমনই। ফুলের পাপড়ির একদম মাঝখানে বিশাল মঞ্জরী আছে, তার ভেতর বড়সড় একটা কাঁটা। বিশ্রী দুর্গন্ধটার উৎস এই কাঁটাটাই।



২। র‍্যাফলসিয়া আরনল্ডি


র‍্যাফলসিয়া আরনল্ডি

এই ফুল খুবই দুষ্প্রাপ্য। সুমাত্রা এবং বোর্নিও দ্বীপের রেইনফরেস্টে কদাচিৎ এর দেখা পাওয়া যায়। পৃথিবীর সব থেকে বর ফুল র‍্যাফলসিয়া আরনল্ডি। এই ফুলে ক্লোরোফিল থাকে না, তাই কোন ধরনের সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়াও দেখা যায় না। অবশ্য সালোকসংশ্লেষনের কোন প্রয়োজনও নেই এই বিরাট আকারের ফুলের, কেননা র‍্যাফলসিয়া আরনল্ডি মাংসাশী! গোলাকৃতির এই ফুলের ব্যাসার্ধ প্রায় ১ মিটার পর্যন্ত হয়, এবং ওজন প্রায় ১১ কেজি! টাইটান আরুমের মত এই ফুলেও খুবই জঘন্য পচা লাশের দুর্গন্ধ রয়েছে। পোকা-মাকড় আকৃষ্ট করার জন্যই মূলত র‍্যাফলসিয়া আরনল্ডি এই দুর্গন্ধ ছড়ায়।


৩। হাইডনোরা আফ্রিকানা


হাইডনোরা আফ্রিকানা

নাম শুনেই হয়ত বুঝতে পারছেন, এই ফুল আফ্রিকায় জন্মায়। হাইড্রোনা আফ্রিকানা উদ্ভিদ বেশ অদ্ভুত হয়। পুরো গাছটাই থাকে মাটির ভেতরে, আর ফুলই শুধু মাটি ফুঁড়ে বের হতে পারে। ফুলের আকৃতি টিউবের মত। ফুলের বাইরের অংশের রঙ বাদামী হয়, আর ভেতরের দিকে কমলা। এই ফুলের ধারে কাছ দিয়ে হেঁটে গেলেও আপনাকে নাক সিটকাতে হবে। কারণ হাইড্রোনা আফ্রিকানায় যে একদম মলের গন্ধ!



৪। ড্রাগন আরুম


ড্রাগন আরুম

ড্রাগন আরুম ফুল পাওয়া যায় মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের পাহাড়ি উঁচু ভূমিতে। এই ফুলের আকারও কিন্তু বেশ বড়, প্রায় এক মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় ড্রাগন আরুম। ফুলের রঙ সাধারণত বেগুনী আর মেরুনের মিশ্রন, আর এই ফুল জন্মায় বসন্তকালে। কিন্তু বসন্তকালে জন্মানো অন্যান্য ফুলের সাথে এর আবার সাদৃশ্য খুঁজতে যাবেন না যেন! ফুলের পাপড়ির ঠিক মাঝখানে বিশাল একটা মঞ্জুরি আছে, দেখতে একদম লম্বা পোড়া বেগুনের মত। ওটা থেকে বেগুন পোড়ার গন্ধ আসলেও মানা যেত, কিন্তু আসে পচা মাংসের গন্ধ।


৫। ক্যারব



ক্যারব

ক্যারব গাছ দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের কড়ই গাছের মত। তা হওয়ারই কথা, কেননা এরা একই গোত্রের। ক্যারব গাছের ফলের কিন্তু অনেক গুণ। এতে আছে ৪ রকমের ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ। গাছটা দেখতেও বেশ। চিরসবুজ জাতীয় এই বৃক্ষে সারাবছরই পাতা থাকে। কিন্তু দেখতে নিষ্পাপ হলে কি হবে? এর ফুলের গন্ধ রীতিমত পীড়াদায়ক। ক্যারব ফুলের গন্ধ উৎকট, অনেকটা বীর্যের মত। পুরুষজাতীয় ক্যারব গাছের ফুল ফোটার সময় এই বাজে গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।